ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঋণগ্রহীতাকে বিষ খাওয়াইয়া হত্যার অভিযোগ, হীড বাংলাদেশের নামে

সাব্বির ইবনে ছিদ্দিক, হাতিয়া

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় এনজিও অফিস থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এক ঋণগ্রহীতা হাসপাতালে মারা গেছেন। নিহতের পরিবারের দাবি—বেসরকারি সংস্থা হীড বাংলাদেশ-এর কর্মকর্তারা তাঁকে ঋণ না দিয়ে উল্টো বিষ খাইয়ে হত্যা করেছেন। তবে এনজিও কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি অফিসে যাওয়ার আগেই বিষপান করেছিলেন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শংকর সাহা (৪০)। তিনি ষশী চন্দ্র সাহার ছেলে ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন।

 

নিহতের স্ত্রী রিংকু সাহা জানান, দিনমজুর শংকর গত ৮-৯ মাস আগে হীড বাংলাদেশের ওছখালি শাখা থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেন। শতকরা সাড়ে ১২ শতাংশ সুদে নেওয়া ওই ঋণের কিস্তি নিয়মিত শোধ করলে তাঁকে নতুন করে আরেক দফা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল এনজিও।
তিনি আর বলেন, আগে নেওয়া টাকা পরিশোধের পর সোমবার বিকেলে আবার ঋণের জন্য অফিসে যান শংকর। কর্মকর্তারা তাঁকে ঋণ না দিয়ে উল্টো অপমান করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অফিস থেকে ফোনে জানানো হয় শংকর বিষ খেয়ে হাসপাতালে আছেন। আসলে অফিসে নিয়ে তাঁকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ

অভিযোগ অস্বীকার করে হীড বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার অলক কুমার হালদার বলেন,
“শংকর এগারো কিস্তিতে ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিছু কিস্তি শোধ করা হলেও অক্টোবর মাসে আরও টাকা বাকি ছিল। কয়েক দিন আগে তাঁর এক আত্মীয় আমাদের জানায়, শংকর যেন আর ঋণ না পান—কারণ তিনি টাকা শোধ করতে পারবেন না। সেদিন অফিসে আসার আগেই তিনি বিষপান করেছিলেন। অফিসে আধা ঘণ্টা পর বাথরুমে গিয়ে বমি শুরু করলে দরজা ভেঙে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমাদের অফিসে বিষ খাওয়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

 

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ওমর ফারুক বলেন,শংকরের পেট থেকে বিষ বের করা হয়েছিল। ইঁদুরনাশক জাতীয় কোনো বিষ খেয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা জানান,খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে এবং পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:৪৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৮ বার পড়া হয়েছে

ঋণগ্রহীতাকে বিষ খাওয়াইয়া হত্যার অভিযোগ, হীড বাংলাদেশের নামে

আপডেট সময় ১২:৪৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় এনজিও অফিস থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এক ঋণগ্রহীতা হাসপাতালে মারা গেছেন। নিহতের পরিবারের দাবি—বেসরকারি সংস্থা হীড বাংলাদেশ-এর কর্মকর্তারা তাঁকে ঋণ না দিয়ে উল্টো বিষ খাইয়ে হত্যা করেছেন। তবে এনজিও কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি অফিসে যাওয়ার আগেই বিষপান করেছিলেন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শংকর সাহা (৪০)। তিনি ষশী চন্দ্র সাহার ছেলে ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন।

 

নিহতের স্ত্রী রিংকু সাহা জানান, দিনমজুর শংকর গত ৮-৯ মাস আগে হীড বাংলাদেশের ওছখালি শাখা থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেন। শতকরা সাড়ে ১২ শতাংশ সুদে নেওয়া ওই ঋণের কিস্তি নিয়মিত শোধ করলে তাঁকে নতুন করে আরেক দফা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল এনজিও।
তিনি আর বলেন, আগে নেওয়া টাকা পরিশোধের পর সোমবার বিকেলে আবার ঋণের জন্য অফিসে যান শংকর। কর্মকর্তারা তাঁকে ঋণ না দিয়ে উল্টো অপমান করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অফিস থেকে ফোনে জানানো হয় শংকর বিষ খেয়ে হাসপাতালে আছেন। আসলে অফিসে নিয়ে তাঁকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ

অভিযোগ অস্বীকার করে হীড বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার অলক কুমার হালদার বলেন,
“শংকর এগারো কিস্তিতে ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিছু কিস্তি শোধ করা হলেও অক্টোবর মাসে আরও টাকা বাকি ছিল। কয়েক দিন আগে তাঁর এক আত্মীয় আমাদের জানায়, শংকর যেন আর ঋণ না পান—কারণ তিনি টাকা শোধ করতে পারবেন না। সেদিন অফিসে আসার আগেই তিনি বিষপান করেছিলেন। অফিসে আধা ঘণ্টা পর বাথরুমে গিয়ে বমি শুরু করলে দরজা ভেঙে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমাদের অফিসে বিষ খাওয়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

 

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ওমর ফারুক বলেন,শংকরের পেট থেকে বিষ বের করা হয়েছিল। ইঁদুরনাশক জাতীয় কোনো বিষ খেয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা জানান,খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে এবং পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”