ঢাকা ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরগুনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ মামলা, রাখাইনসহ বিএনপি নেতাকর্মী আসামি করার অভিযোগ

মো. নাঈম হোসেন

বরগুনার তালতলী উপ‌জেলায় দুই বছর আগে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে হামলা, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মী, রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী‌দের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ছগির হাওলাদার চলতি বছরের ৩০ জুলাই আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুসহ ১০১ জনের নাম রয়েছে, অজ্ঞাতনামা আরও ৭০-৮০ জনকেও আসামি করা হয়।

তবে আসামিদের তালিকায় বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম আসায় ক্ষোভ ছড়ায়। আজ মঙ্গলবার (০৫ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলা শহরের সদর রোডে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁদের দাবি, বাদী মো. ছগির হাওলাদারকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মামলায় থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের নাম বাদ দিতে হবে। প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

দলীয় কার্যাল‌য়ে হামলার মামলায় উপ‌জেলার শারিকখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. নিজাম আকন ৪৪ নম্বর আসামি, তাঁর ভাই যুবদল নেতা বেল্লাল আকন ৩৬ নম্বর আসামি। বড়বগী ইউনিয়নের যুবদল নেতা হাবিব ৭২ নম্বর আসামি। আসামীর তা‌লিকায় আছেন শ্রমিক দল নেতা হারুন চৌকিদার। রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা পর্যন্ত আসামীর তা‌লিকা থে‌কে বাদ প‌ড়েন‌নি।
রাখাইন সম্প্রদায়ের মংনানসে মংনান্ট ও থুইমং সুঁই তালুকদারকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।এছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক লিটন মোল্লা বলেন, যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা সক্রিয় দলীয় কর্মী। বাদী মামলা দা‌য়ে‌রের আগে কারও সঙ্গে পরামর্শ করেননি। জমিজমা নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত বিরোধ আছে, তা‌দের‌কেও আসামী করা হ‌য়ে‌ছে।

উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দলীয় কার্যাল‌য়ে হামলা খাংচু‌রের ঘটনার দিন বাদী ঘটনাস্থলে ছিলেন না। নিজের স্বার্থের জন‌্য তি‌নি দলীয় নেতাকমী‌দের মামলায় আসামী করেছেন।

রাখাইন মংনানসে মংনান্ট বলেন, আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। বাদী জমি দখলের জন্য আমাদেরকে মামলায় আসামি করেছেন। জমি নিয়ে এখ‌নো তিনটি মামলা আদাল‌তে চলছে।

নিজাম আকন অভিযোগ করেন, বাদী আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দেওয়ায় আমাকে ও আমার ভাইকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ পেয়েছি। তদন্তে যাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দা‌খিল করা হ‌বে। প্রমাণ না থাকলে অভিযোগপত্র থে‌কে তা‌দেরকে অব‌্যহ‌তির সুপারিশ করা হ‌বে।

 

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৫৭:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
৪ বার পড়া হয়েছে

বরগুনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ মামলা, রাখাইনসহ বিএনপি নেতাকর্মী আসামি করার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৫:৫৭:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

বরগুনার তালতলী উপ‌জেলায় দুই বছর আগে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে হামলা, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মী, রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী‌দের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ছগির হাওলাদার চলতি বছরের ৩০ জুলাই আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুসহ ১০১ জনের নাম রয়েছে, অজ্ঞাতনামা আরও ৭০-৮০ জনকেও আসামি করা হয়।

তবে আসামিদের তালিকায় বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম আসায় ক্ষোভ ছড়ায়। আজ মঙ্গলবার (০৫ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলা শহরের সদর রোডে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁদের দাবি, বাদী মো. ছগির হাওলাদারকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মামলায় থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের নাম বাদ দিতে হবে। প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

দলীয় কার্যাল‌য়ে হামলার মামলায় উপ‌জেলার শারিকখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. নিজাম আকন ৪৪ নম্বর আসামি, তাঁর ভাই যুবদল নেতা বেল্লাল আকন ৩৬ নম্বর আসামি। বড়বগী ইউনিয়নের যুবদল নেতা হাবিব ৭২ নম্বর আসামি। আসামীর তা‌লিকায় আছেন শ্রমিক দল নেতা হারুন চৌকিদার। রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা পর্যন্ত আসামীর তা‌লিকা থে‌কে বাদ প‌ড়েন‌নি।
রাখাইন সম্প্রদায়ের মংনানসে মংনান্ট ও থুইমং সুঁই তালুকদারকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।এছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক লিটন মোল্লা বলেন, যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা সক্রিয় দলীয় কর্মী। বাদী মামলা দা‌য়ে‌রের আগে কারও সঙ্গে পরামর্শ করেননি। জমিজমা নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত বিরোধ আছে, তা‌দের‌কেও আসামী করা হ‌য়ে‌ছে।

উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দলীয় কার্যাল‌য়ে হামলা খাংচু‌রের ঘটনার দিন বাদী ঘটনাস্থলে ছিলেন না। নিজের স্বার্থের জন‌্য তি‌নি দলীয় নেতাকমী‌দের মামলায় আসামী করেছেন।

রাখাইন মংনানসে মংনান্ট বলেন, আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। বাদী জমি দখলের জন্য আমাদেরকে মামলায় আসামি করেছেন। জমি নিয়ে এখ‌নো তিনটি মামলা আদাল‌তে চলছে।

নিজাম আকন অভিযোগ করেন, বাদী আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দেওয়ায় আমাকে ও আমার ভাইকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ পেয়েছি। তদন্তে যাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দা‌খিল করা হ‌বে। প্রমাণ না থাকলে অভিযোগপত্র থে‌কে তা‌দেরকে অব‌্যহ‌তির সুপারিশ করা হ‌বে।